পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে

পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে এই বিষয় নিয়ে আজকের ব্লগ। মুসলমানদের সব চেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহা। এই দুই উৎসব আমরা মুসলিমরা খুব আনন্দের সাথে উৎযাপন করি।

পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে

এজন্য অনেকে এই বিষয়ে অনেক কিছু জানতে ইচ্ছা প্রকাস করে যেমন ঈদুল আজহা কবে, আবার এই ইদের তাৎপর্য এবং কি কি করনীয় ইত্যাদি। তাই আজকে আমরা এগুলো সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

পোস্ট সুচিপত্রঃ পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে

পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে

ঈদুল ফিতরের পরে আরেকটি বড় উৎসব হচ্ছে ঈদুল আযহা। এই দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে গবাদি পশু জবাই করে থাকে। এই ঈদ আসার আগে মানুষ অনেক রকম প্রস্তুতি নেই এবং ইচ্ছা পোষণ করে কবে আসবে এই ঈদ, কুরবানি এদের অপেক্ষাই থাকে অনেকে। আজকে আমরা সেই বিষয় নিয়ে জানব কবে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা এবং এই কুরবানি ঈদের সকল সুন্নত সমূুহ। তাই পুরো আর্টিকেলটি মন দিয়ে পরার অনুরোধ রইলো।

আরও পড়ুনঃ কোরবানি করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানুন

ঈদের তারিখ ঘোষণা করা হয় সাধারণত চাঁদ দেখার অপর নির্ভর করে। আর এগুলো সর্ব প্রথম প্রকাশ করে বড় বড় মুসলিম দেশগুলো যেমন কাতার,সৌদি আরব,দুবাই  এরপরেও কিছু দেশ আছে যারা সবার আগে চাঁদ দেখে ঈদের তারিখ ঘোষনা করে। বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করে তারা চাঁদ দেখে উনুমান করে যে কোন দিনে ঈদ উদযাপন হতে পারে। 

কোরবানি ঈদ ২০২৫ সালের কত তারিখে 

বাংলাদেশে কোরবানি ঈদ কবে পালিত হবে। এই বিষয় নিয়ে আমাদের জানা খুব জরুরি কারন ঈদুল আযহা ঈদের আগে অনেক কাজকর্ম করতে হয় গরু কিনা বাঁ যেই যেটা দিয়ে কোরবানি দিবে সেই গবাদিপশু ক্রয় করা ছারাও অনেক সরঞ্জাম প্রস্তুত করতে হয়। এজন্য কখন কোরবানি ঈদ পালিত হবে সেই বিষয়ে আমাদের কে ধারনা রাখতে হবে।

২০২৫ সালের ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ সম্পর্কে মধ্যপ্রাচ্ছে ঘোষণা করেছে যে জুন মাসের ৬ তারিখে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হতে পারে। সাধারণত দেখা যাই মধ্যপ্রাচ্ছের দেশ গুলোর একদিন পরে আমাদের দেশে  ঈদ পালিত হয়। আরবি মাস অনুযায়ী জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়। চাঁদ দেখার অপর বাকিটা নির্ভর করবে। তাই বলা যেতে পারে  মধ্যপ্রাচ্ছের একদিন পরে বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইনশাল্লাহ।

ঈদুল আজহার তাৎপর্য ও ইতিহাস

মুসলিমদের প্রধান দুটি ঈদের মধ্যে একটি হলো ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা শব্দটি আরবি ভাষা থেকে আসেছে। ঈদুল আযহার  অর্থ হলো ত্যাগের উৎসব যা বাংলা ভাষাই এটি কোরবানি ঈদ নামে পরিচিত। ঈদুল আযহার মুল উদ্দেশ্যই হলো আল্লাহর নামে নিজের হালাল উপার্জিত সম্পদের অংশ ত্যাগ করা বা কুরবানি করা। ঈদুল আযহার দিনে সকাল বেলা নামাজ শেষ করে মুসলিমদের সামর্থ্য অনুযায়ী যে যার মত গরু,ছাগল,ভেড়া, উট শরিয়ত অনুমোদিত পশু আল্লাহর নামে কোরবানি করে থাকে।

ইব্রাহিম (আঃ) তাঁর পুত্র হজরত ইসমাইল (আঃ) কে কুরবানি করার জন্য পর পর ৩ বার সপ্নে আদেশ প্রাপ্ত হন। ইব্রাহিম (আঃ) তাঁর পুত্র কে কুরবানি করার চেষ্টা করলে আল্লাহ তাআলা তাঁর কুরবানি কবুল করে নেন এবং তাঁর সন্তানের জাইগাই জান্নাতি দুম্বা দিয়ে কুরবানি সম্পন্ন করান। কুরবানি হচ্ছে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর সুন্নয। এজন্য আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে যে যারা সামর্থ্য অনুযায়ী কুরবানি দিয়ে থাকি। 

কোরবানি করার গুরুত্ব ও ফজিলত

পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে? ইতিমধ্যে আমরা তা জানতে পেরেছি জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে। কোরবানি করার গুরুত্ব এত বেশি কেন? কারন এই কোরবানি করার মাধ্যমে আল্লাহ কে সন্তুষ্টি করা যাই। এগুলোর রক্ত বাঁ গস্ত কোন কিছুই আল্লাহর কাছে যাই না সুধু যাই আমাদের তাকওয়া এজন্য কোরবানি সামর্থ্য বান্দের জন্য করা অনেক গুরুত্ব এবং অনেক ফজিলতপূর্ণ।

কুরআন এবং অনেক হাদিসেও কোরবানি করার ফজিলত সম্পর্কে কিছু আয়াত রয়ছে। এর মাধ্যমে বোঝা যাই যে কোরবানি করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান্দের জন্য প্রযোজ্য। আল্লাহ কে খুশি করার জন্য আমাদের পছন্দের জিনিস উৎসর্গ করাই কোরবানি। তাই আমাদের যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা যেন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করে। 

কোরবানি করার ফজিলত ও গুরুত্ব অনেক এর মাধ্যমে অনেক নেকি অর্জন হয় এবং মহান আল্লাহ কে খুশি করা যাই। আপনি যদি যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যয় কোরবানি দিবেন। এই কোরবানি ত্যাগ করে আমরা গুনাহের ভাগিদার হতে চাই না। তাই আল্লাহ কে খুশি করার জন্য আমাদের মন থেকে এবং হালাল উপার্জন করে কোরবানি করা উচিত।

কোন কোন পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে

আমরা জানতে পেরেছি যে পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে। কোন কোন পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ এগুলো সমন্ধেও আমাদের কে জানতে হবে। বড় ধরনের মধ্যে ৩ ধরনের পশু আর ছোট পশুর মধ্যে ৩ ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করা যাই। বড় পশুর মধ্যে উত,মহিস এবং গরু দিয়ে কোরবানি করা যাবে এবং ছোট পশুর মধ্যে দুম্বা, ছাগল এবং ভেরা এগুলো দিয়ে কোরবানি করা যাবে। 

পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে

অনেকেই আবার বুঝতে পারে না যে গাভি দিয়েও কি কোরবানি করা যাই, গাভি এবং ষাঁড় দুটো দিয়েই কোরবানি করা যাই। যদি কেউ গাভি দিয়ে কোরবানি করতে চাই তাহলে সে সেটা দিয়ে করতে পারবে কোন সমস্যা নাই। অনেকেই পশুর দাঁত দেখে বয়স নির্ধারণ করে যে এটা দিয়ে কোরবানি হবে কি না। উটের ক্ষেত্রে ৫ বছরের অপরে হলে সেটা দিয়ে কোরবানি করা যাবে। 

যদি ৫বছরের নিচে হয় তাহলে জবাই করে খাওয়া যাবে কিন্তু কোরবানি করা যাবে নাহ। গরুর ক্ষেত্রে ২ বছরের অপরে হতে হবে এবং ছাগল, দুম্বা এবং ভেড়ার ক্ষেত্রে ১ বছরের অপরে হওয়া লাগবে। তাহলে ওগুলো দিয়ে কোরবানি হবে। তাই কোরবানি দাওয়ার আগে আমাদের কে এগুলো লক্ষ্য করতে হবে।

ঈদের কয়দিন পর্যন্ত কোরবানি করা যাবে 

ঈদের কয়দিন পর্যন্ত কোরবানি করা যাই? এই বিষয়টি নিয়ে অনেকেই ভুক্তভোগী। ঈদের কয়দিন পর্যন্ত কোরবানি করা যাই না সুধু ঈদের দিনেই কোরবানি করতে হয় এ সম্পর্কে অনেকেই বুঝতে পারে না। সুধু ঈদের দিন এ কোরবানি করতে হয় এমন নয়। আপনি যদি কোরবানি দিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যয় আপনাকে এ বিষয় গুলো জানতে হবে।

কারন ঈদের দিনে কোন কারন বসত আপনি কোরবানি না দিতে পারেন তাহলে পরের দিনে আপনি কোরবানি দিতে পারবেন। সাধারনত জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ ১১ তারিখ এবং ১৩ তারিখ পর্যন্তও কোরবানি করা যায়। এজন্য প্রথম দিনে যদি আপনি কোরবানি না দিতে পারেন তাহলে পরের দুই দিনের যেকোনো সময় দিতে পারেন।

তবে উত্তম হলো ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের পরে কোরবানি দাওয়া। আমাদের নবীগণ ঈদের নামাজের পর পরই কোরবানি দিতেন। এটাই উত্তম। তাই যদি সম্ভব হয় তাহলে ঈদের নামাজের পরেই কোরবানি দিয়ে দাওয়া। এটাই সব চেয়ে উত্তম হবে। যদি একান্ত সমস্যা হয় তাহলে পরের দিন বা তার পরের দিনে দিতে পারবেন কোন সমস্যা নাই।

কোরবানি সুন্নত নাকি ওয়াজিব জানুন

কোরবানি সুন্নত নাকি ওয়াজিব? কোরবানি ঈদে আল্লাহর কাছে সব চেয়ে পছন্দিয় আমল হচ্ছে কোরবানি করা। আমাদের যেই যার সাধ্য মতে কোরবানি দিয়ে থাকি। অনেকেই কোরবানি কে সুন্নত বলে আবার অনেকেই এটাকে ওয়াজিব বলে থাকে। হানাফি মাজহাব এই কোরবানি করা ওয়াজিব আর আমাদের বাংলাদেশে হানাফি মাজহাব এর অনুসারি বেশি তাই হানাফি মাজহাবে এই কোরবানি করা ওয়াজিব।

আরও পড়ুনঃ কোরবানি করার গুরুত্ব ও ফজিলত

যাদের কে আল্লাহ তায়ালা সম্পদ দিয়েছে। যথার্থ সাবলম্বি করেছেন তাদের অপর এই কোরবানি করা ওয়াজিব। তাই সামর্থ্য অনুযায়ী আমাদের কে কোরবানি করা উচিত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হালাল ইনকাম উপার্জন করে কোরবানি দেয়া আবশ্য।

কোরবানি ভাগে দেওয়া যাবে কি 

আমাদের দেশে অনেকেই ভাগে কোরবানি দেই। ভাগে কোরবানি কি দাওয়া যাবে? হ্যাঁ ভাগে কোরবানি দাওয়া যাবে। অনেকে মনে করেন যে ভাগে কোরবানি দাওয়া যাই না,এটা ভুল ধারনা। ৭ ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দাওয়া যায়। কিছু আলেম বলে থাকে যে ভাগে কোরবানি দাওয়া জায়েজ না। কিন্তু বেশির ভাগ আলেম বলে ভাগে কোরবানি দাওয়া যায়। 

আবার অনেকে মনে করে যে ৭ ভাগের নিচে কোরবানি দাওয়া যায় না। এটাও ভুল ধারনা আপনি চাইলে ৭ ভাগের নিচে যেই কয় ভাগ হক সেটা কোরবানি দিতে পারবেন। ৭ ভাগের অপরে দাওয়া যাই না কিন্তু আপনি চাইলে ৭ ভাগের নিচে কোরবানি দিতে পারবেন। এতে কোন সমস্যা হবে না। 

কোরবানির গোসত বণ্টনের সঠিক নিয়ম 

কোরবানির গোসতের সঠিক নিয়ম হচ্ছে ৩ ভাগে বিভক্ত করা উত্তম যার আক ভাগ নিজের জন্য আরেক ভাগ আত্মীয়স্বজন  এর জন্য রাখবেন আর এক ভাগ গরিব মিসকিনদের মাঝে দিবেন। আমরা জানতে পেরেছি যে পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে? এজন্য এখন থেকে নিজেদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং হালাল উপায়ে কোরবানি দিতে হবে।
পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে

আপনি চাইলে অনুমান করে ৩ ভাগে ভাগ করতে পারেন এমন কোন বিষয় না যে আপনাকে  একেবারে যথার্থ ভাগে ভাগ করতে হবে। এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন কারন নাই। আপনি আপনার মত করে রাখবেন এবং বাকিটুকু আত্মীয়স্বজন ও গরিব মিসকিনদের দিয়ে দিবেন। এজন্য আপনি আপনাদের মত করে ভাগ করে ৩ ভাগে ভাগ করে কোরবানি গোসত বণ্টন করতে পারেন।

কোরবানি করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানুন

যেকোনো পশু দিয়ে কিন্তু কোরবানি করা জায়েজ না। কোন অসুস্থ পশু দিয়ে কোরবানি করলে কোরবানি করলে সেটা হবে না। কোন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অন্ধ পশু, অন্ধ পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে না। আবার এমন পশু যেখানে কোরবানি করা হবে সেই জাইগা পর্যন্ত হেটে যেতে পারছে না এমন কোন খরা পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে না। আবার খুবই দুর্বল এবং বয়স্ক প্রানি দিয়ে কোরবানি করা যাবে না। আঘাত প্রাপ্ত কোন প্রানি দিয়েও কোরবানি করলে হবে না। 

আরও পড়ুনঃ কোরবানি ভাগে দেওয়া যাবে কি 

আমাদের প্রিয় নবি সাঃ শিং ভাঙ্গা এবং কান কাটা এরকম প্রানি দিয়ে কোরবানি করতে নিষধ করেছেন। বর্তমানে মানুষ এখন অনলাইন থেকে গরু বা কোরবানির পশু ক্রয় করছে তাদের জন্য এটা দুশ্চিন্তার কারন হতে পারে। আপনারা যারা অনলাইন থেকে কোরবানির পশু ক্রয় করবেন তারা অবশ্যয় বুঝে দেখে কিনবেন যে পশুর বাহ্যিক ত্রুটি মুক্ত কি না আর পশুর বয়স ঠিক আছে কি না।

লেখকের শেষ বক্তব্য

পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে এই বিষয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত বলেছি। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে আর কি কি করা লাগবে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। ঈদের আগাম প্রস্তুতি নিতে আপনাদের সহজ হবে আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পরে। 

ঈদের এই বিষয় নিয়ে আমাদের আর্টিকেলটি পরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল পরতে চাইলে আমদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করার জন্য অনুরোধ করা হলো। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বাংলা অনলাইন টিপস নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url